লেখিকা, চিকিত্সক ফারহানা মোবিন:
এই সময়ের অসুখগুলোর মধ্যে বসন্ত অন্যতম। দিনে গ্রীষ্মকালীন
গরম আর ভোরে শীতকালের মতো ঠান্ডা। এই ঠান্ডা -গরমের
সংমিশ্রণে বেড়েই চলছে বসন্তের জীবাণু, হাঁচি, কাশি, সর্দি, টনসিলে
ইনফেকশনের পরিমাণ। এই অসুখগুলোর বিরূদ্ধে উৎকৃষ্ট হাতিয়ার
হলো চিরতা। বাজারে চিরতার পাতলা ডালপালা বিক্রি হয়। এগুলো
ধুয়ে পরিষ্কার করে গ্লাস বা বাটিতে পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে
সকালে ওই পানি খেতে হয়। সংক্রামক অসুখগুলোর বিরূদ্ধেও রয়েছে
চিরতার অগ্রণী পদক্ষেপ। চিরতা দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়িয়ে তোলে। গবেষণা করে দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত তিতা
খাবার খান, তাঁদের অসুখ হওয়ার প্রবণতা কম থাকে। যেকোনো
কাটা, ছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রূত শুকায়। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য
চিরতা ভীষণ জরূরি পথ্য। চিরতার রস দ্রূত রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে
দেয়। ফলে ডায়াবেটিস থাকে নিয়ন্ত্রণে। উ‛চমাত্রার কোলেস্টেরল,
উ‛চরক্তচাপ, অতি ওজনবিশিষ্ট ব্যক্তির জন্যও চিরতা দরকারি।
টাইফয়েড জ্বর হওয়ার পর আবারও অনেকের প্যারাটাইফয়েড জ্বর
হয়। তাই টাইফয়েড জ্বরের পরে চিরতার রস, করলা খেলে যথেষ্ট
উপকার পাওয়া যায়। চিরতার রস কৃমিনাশক, বীর্যবর্ধক হিসেবে কাজ
করে। তারূণ্য ধরে রাখতেও এর গুরূত্ব অপরিসীম। শরীরের
ঝিমুনিভাব, জ্বরজ্বর লাগা—এই সমস্যাগুলো দূর করে চিরতার রস।
দেখতে কালচে কাঠির মতো। কিন্তু এর গুণ বহুবিধ। যারা নিয়মিত
তিতা বা চিরতার রস খায়, তাদের ফুট পয়জনিং (খাবারের মাধ্যমে
দেহে রোগজীবাণু ঢুকে দেহে অসুখ তৈরি করা) হওয়ার আশঙ্কা কম
থাকে। এ ছাড়া চিরতা রক্ত পরিষ্কারক হিসেবেও কাজ করে। যাঁদের
ডায়াবেটিস নেই কিন্তু রক্তে চিনির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় সর্বদা
বেশি থাকে, তাঁদের জন্য চিরতা গুরূত্বপূর্ণ হাতিয়ার। সর্বোপরি
বিবেচনায়, চিরতা হোক আপনার নিত্যসঙ্গী।
রক্ত বাড়ায় কলার মোচা।